নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল, নাটকের মূলভাব জানো – নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোন ভাষায় কথা বলতেন

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তুমি কি সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল জানতে চাচ্ছো? তাহলে এই আর্টিকেলটি তোমার জন্য। কারণ এই আর্টিকেলে সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই তুমি যদি সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল জানতে চাও তাহলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ো।
নবাব-সিরাজউদ্দৌলার-মৃত্যু-কিভাবে-হয়েছিল-সিরাজউদ্দৌলা-নাটকের-মূলভাব-নবাব-সিরাজউদ্দৌলার-প্রথম-স্ত্রীর-নাম-কি-নবাব-সিরাজউদ্দৌলার-শ্বশুরের-নাম-কি-নবাব-সিরাজউদ্দৌলা-কোন-ভাষায়-কথা-বলতেন-কার-নির্দেশে-সিরাজউদ্দৌলাকে-হত্যা-করা-হয়-সিরাজউদ্দৌলার-বাবার-নাম-কি-সিরাজউদ্দৌলার-খালার-নাম-কি-সিরাজউদ্দৌলার-নানার-নাম-কি-নবাব-সিরাজউদ্দৌলা-কোন-ভাষায়-কথা-বলতেন-সিরাজউদ্দৌলা-কত-বছর-বয়সে-সিংহাসনে-বসেন-সিরাজউদ্দৌলা-নাটকের-শেষ-সংলাপ-কার-সিরাজউদ্দৌলা-কোন-ধরনের-নাটক
 
বর্তমানে পরীক্ষায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল এই সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন হচ্ছে। তাই এই প্রতিযোগিতার সময়ে সবার থেকে এগিয়ে থাকতে অবশ্যই সিরাজউদ্দৌলার সমস্ত নাটক বিশেষ করে সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল এই ঘটনা ভালোভাবে মুখস্ত রাখতে হবে। চলো তোমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল জেনে নেওয়া যাক।
 

আর্টিকেল সূচিপত্রঃ নিচের যে অংশে পড়তে চান তার উপর ক্লিক করুন

ভূমিকাঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল ও সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব

এই আর্টিকেল জুড়ে সিরাজউদ্দৌলার নাটক সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে, বিশেষ করে সিরাজউদ্দৌলার পুরো নাম কি, নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি, নবাব সিরাজউদ্দৌলার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম কি, সিরাজউদ্দৌলার মায়ের নাম কি, সিরাজউদ্দৌলার বাবার নাম কি, নবাব সিরাজউদ্দৌলার শ্বশুরের নাম কি, সিরাজউদ্দৌলা কত বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন, সিরাজউদ্দৌলার প্রধান গুপ্তচর কে, সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব, নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল এগুলো সম্পর্কে।

সিরাজউদ্দৌলার পুরো নাম কি

সিরাজউদ্দৌলার পুরো নাম ছিল মির্জা মোহাম্মদ সিরাজউদ্দৌলা।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি

অনেকেই গুগলে সার্চ করে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি? কারণ বর্তমানে অনেক পরীক্ষাতেই প্রশ্ন করা হচ্ছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম কি? তুমিও যদি এই প্রশ্নের উত্তরটি জানতে চাও, তাহলে জেনে নাও নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রথম স্ত্রীর নাম হচ্ছে উমদাতুন্নিসার বেগম। যার সাথে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিয়ে হয়েছিল ১৭৪৬ সালে

নবাব সিরাজউদ্দৌলার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম কি

নবাব সিরাজউদ্দৌলার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম লুফুন্নেসা বেগম

সিরাজউদ্দৌলার মায়ের নাম কি

সিরাজউদ্দৌলার মায়ের নাম ছিল আমিনা বেগম। তিনি ইসলাম ধর্মের শিয়া এর অনুগত্য ছিলেন।

সিরাজউদ্দৌলার বাবার নাম কি

সিরাজউদ্দৌলার বাবার নাম ছিলো জৈনুদ্দিন আহমদ, যিনি বিহারের নায়েবে-নাজিম ছিলেন।

সিরাজউদ্দৌলার খালার নাম কি

সিরাজউদ্দৌলার খালার নাম ছিল ঘসেটি বেগম, যিনি পলাশের যুদ্ধের অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন।

সিরাজউদ্দৌলার নানার নাম কি

সিরাজউদ্দৌলার নানার নাম ছিল নবাব আলীবর্দী খান, যার কাছ থেকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ক্ষমতার অর্জন করেছিলেন অর্থাৎ সিংহাসনে বসেছিলেন মাত্র ২৩ বছর বয়সে।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার শ্বশুরের নাম কি

নবাব সিরাজউদ্দৌলার শ্বশুরের নাম ছিল মির্জা ইরিচ খান

নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোন ভাষায় কথা বলতেন

প্রথমে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ফার্সি ভাষা ও পশতু ভাষায় কথা বলতেন। তবে পরে তিনি বাংলা ভাষার রপ্ত করেছিলেন এবং সম্পূর্ণরূপে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারতেন। আশা করি জানতে পেরেছেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোন ভাষায় কথা বলতেন।

সিরাজউদ্দৌলা কত বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন

নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন।

সিরাজউদ্দৌলার প্রধান গুপ্তচর কে

সিরাজউদ্দৌলার প্রধান গুপ্তচর ছিল নারান সিং, যিনি রাইসুল জুহালা নাম ধারণ করতেন যাতে কেউ তাকে গুপ্তচর মনে না করে।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রথম সংলাপটি কার

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রথম সংলাপটি ক্লেটনের।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল

পলাশীর যুদ্ধ নিয়ে তৈরি এই সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সবথেকে মর্মান্তিক কাহিনী হলো নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু। অনেকে কৌতূহলের জন্য কিংবা ছাত্রছাত্রীরা তাদের জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রশ্ন করে নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল? বর্তমানে বিভিন্ন পরীক্ষাতেও প্রশ্ন আসছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল?
 
যাদের এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগ্রহ রয়েছে তারা শেষ পর্যন্ত পড়ো। সিরাজউদ্দৌলা নাটকটি আমাদের দেশের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই নাটক থেকে এডমিশন ও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় অনেক প্রশ্ন আসে। তাই অবশ্যই তোমাদের সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল তা জেনে রাখা উচিত।
 
ষড়যন্ত্রের কারণে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার শেষ নবাব ” নবাব সিরাজউদ্দৌলা” হেরে গিয়েছিলেন। নবাবের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ যেটি পলাশীর প্রান্তর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যুদ্ধে হারার পরে তিনি সারারাত উটের পিঠে ভ্রমণ করে পরেরদিন ভোরে তার রাজপ্রাসাদে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু তখনও রবার্ট ক্লাইভ এবং মীরজাফর পলাশীর প্রান্তরাই ছিল।
 
পরে মীরজাফর বাংলার সম্রাজ্য দখল করার জন্য রবার্ট ক্লাইভকে মুর্শিদাবাদে যেতে বলে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা যে ৫০ কিলোমিটার পথ এক রাতে পাড়ি দিয়েছিল সেই একই ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে রবার্ট ক্লাইভের তিনদিন লেগে গিয়েছিল। পরিস্থিতি খারাপ দেখে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ২ হাজার সৈন্য নিয়ে রাজধানী মুর্শিদাবাদ রক্ষার চেষ্টা করে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল তার ছবি-১
 
কিন্তু কারো সাহায্য না পেয়ে তিনি সেখানেও কারোর সাহায্য পায়নি যার ফলে তিনি মুর্শিদাবাদ থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি প্রথমে একাই পালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু তার স্ত্রী তার সাথে যাওয়ার জন্য আকুল আবেদন করে। তাই তখন নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার স্ত্রী লুৎফুন্নেছা, কন্যা জোহুরা এবং গোলাম হোসেনকে নিয়ে ৭৫৭ সালে ২৪ জুন রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে ১৭৫৭ সালে ২৪ জুন পলায়ন করেন। কাহিনী এখান থেকেই শুরু হয়, তাই যারা জানতে চাচ্ছো নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল তারা এই অংশ থেকে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকো।
 
নবাব সিরাজউদ্দৌলা আশা করেছিলেন পশ্চিমাঞ্চলের ফরাসি সেনাপতির সহযোগিতা নিয়ে রাজা রাম নারায়ণের কাছ থেকে সৈন্য নিয়ে বাংলার রাজত্বকে রক্ষা করবেন। ওই সময়ে মীরজাফরের ছেলে মিরন সমগ্র বাংলায় খুঁজে বেড়াচ্ছে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা যেখানে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন সেখানে একজন ফকির ছিল।
 
ওই ফকির মীরজাফরের ছেলে মিরনকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার অবস্থান বলে দেয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার খোঁজ পাওয়ার কারণে তারা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়, কারণ দিন রাত এক করে যাকে খোঁজা হচ্ছে তার খবর পাওয়া গেছে। মীরজাফররা ভাবতেও পারেনি নবাব সিরাজদৌলা তাদের এতটা সন্নিকটে অবস্থান করছে।
 
নবাব সিরাজউদ্দৌলার অবস্থান জানার পরে মীরজাফরের জামাই মীর কাসেম সৈন্য নিয়ে নবাবের অবস্থানরত এলাকা ঘেরাও করে ফেলে। এখানে একটা MCQ আছে, সেটি হল নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দি হন? MCQ অনেক পরীক্ষার প্রশ্নই আসে। তাই নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দি হন এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল এই ঘটনা জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ো।
 
১৭৫৭ সালের ২ জুলাই ওই স্থান থেকে বন্দী করে নবাবকে মুর্শিদাবাদে আনা হয়। a history of military tragention of the british nation of hindustan বই এর ভাষ্যমতে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে মাঝ রাতে হাজির করা হয়েছিল মীরজাফরের সামনে। যে বাসস্থানে কয়েকদিন আগেও নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাস করতেন এবং সমগ্র বাংলা শাসন করতেন সেই বাসস্থানে মীরজাফরের সামনে তিনি প্রাণভিক্ষা চান।
 
সেই সভার অন্যান্য ব্যক্তিদের মতামত নেওয়ার জন্য নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সভা থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সভায় মীরজাফর অন্যান্যদের মতামত গ্রহণ করে নবাবকে সাজা দেওয়ার জন্য তিনটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। প্রথমটি হচ্ছে নবাবকে মুর্শিদাবাদের কারাগারে বন্দী করে রাখা, দ্বিতীয়টি হচ্ছে নবাবকে দূরের কোন স্থানে বন্দি করে রাখা এবং তৃতীয়টি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা।
 
মীরজাফর মনে মনে চেয়েছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে মুর্শিদাবাদেই কারাগারে বন্দী করে রাখতে। কিন্তু মীরজাফরের ছেলে মীর মিরন নবাবকে বন্দী করে রাখতে কোন ভাবেই একমত ছিলেন না। তাই মীর মিরন ঘোর বিরোধিতা করে মীরজাফরকে বিশ্রাম নিতে বলেন এবং তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে শাস্তি দেওয়ার সকল দায়ভার গ্রহণ করে।
 
মীর মিরন মোহাম্মদী বেগকে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করার দায়িত্ব দেয় এবং মোহাম্মদী বেগ মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাংলার শেষ নবাব ”নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে” হত্যা করতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু এই মোহাম্মদী বেগ ছিল নবাবের পালিত ভাই। এই মোহাম্মদী বেগ এর অন্য নাম ছিল লাল মোহাম্মদ যাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নিয়ে এসেছিল নবাবের বাবা মা। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! পালিত ভাই মোহাম্মদী বেগ সামান্য টাকার বিনিময়ে নবাবকে হত্যা করে।
 
মীর মিরন এবং তার সঙ্গী সাথীরা একত্রিত হয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলার কাছে যায়। তাদের এই দলবল দেখেই নবাব বুঝতে পেরেছিলেন তার সাথে কি হতে চলেছে। যখন নবাব বুঝতে পারলেন তার মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে তখন তিনি তার মৃত্যুর পূর্বে মীর মিরনকে আবেদন করেছিলেন যে, তাকে যেন ওযু করে নামাজ পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
 
কিন্তু মীর মিরনের নির্দেশনায় নবাবের গায়ে এক কলসি পানি ঢেলে দেওয়া হয়। নবাব পরিস্থিতির শিকার হয়ে খাবার জন্য মাত্র এক গ্লাস পানি চেয়েছিলেন, কিন্তু তাকে তাও দেওয়া হয়নি। তখন হঠাৎ করে মোহাম্মদী বেগ নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে তলোয়ার দিয়ে প্রথম আঘাত করে। তারপরে তার দলবল নবাবের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে নবাবকে হত্যা করে।
 
মাত্র ২৫ বছর বয়সে মীর জাফরের ছেলে মীর মিরনের ষড়যন্ত্রে মৃত্যুবরণ করেন। নবাবের মৃত্যুর পরে তার মরদেহ হাতির পিঠে চড়িয়ে সমগ্র রাজ্যে ঘুরে বেড়ানো হয় যাতে মীর মিরন মানুষদের দেখাতে পারে নবাব সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। তবে এই মীর মিরনের হত্যাযজ্ঞ এখানেই শেষ হয়নি, তিনি সিরাজউদ্দৌলার মাতা আমেনা বেগম এবং খালা ঘসেটি বেগমকে বুড়িগঙ্গায় নৌকা ডুবিয়ে হত্যা করে।
 
আর অন্যান্য নারীদের বিষ খাইয়ে হত্যা করেছিল এই মানুষরূপী অমানুষ মীর মিরন। শুধুমাত্র সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রীকে তারা মেরে ফেলেনি কারণ সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রীকে মীরজাফর এবং তার পুত্র মীর মিলন বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু সিরাজউদ্দৌলার দ্বিতীয় স্ত্রী লুফুন্নেসা বেগম এই বিয়েতে দ্বিমত পোষণ করেন এবং বাকি জীবন সিরাজউদ্দৌলার কবরের পাশেই কাটিয়ে দেন।
 
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল আশা করি বুঝতে পেরেছ। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর ঘটনা কাহিনীর রূপে তুলে ধরা হয়েছে যাতে তোমরা সহজে মনে রাখতে পারো এবং যেকোনো পরীক্ষায় প্রশ্ন আসলে সহজেই তার উত্তর দিতে পারো। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা ইতিহাসে সারা জীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে কারণ তিনি ছিলেন বাংলার শেষ নবাব।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব

তুমি যদি শুধুমাত্র সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব মুখস্ত রাখতে পারো তাহলে সিরাজউদ্দৌলা নাটকের যেকোন অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর খুব সহজে যেতে পারবে। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের বিশেষ করে ঘ নাম্বারের উত্তর দিতে পারবে যদি তুমি শুধুমাত্র সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব জানো। যেহেতু এই নাটকটি অনেক বড় তাই এই নাটকের ঘটনা মনে রাখা অনেক কষ্টকর।
 
তোমাদের এই কষ্টকে সামান্য সহজ করতে আর্টিকেলের এই অংশে আলোচনা করা হবে নাটকের মূলভাব। গল্পের মাধ্যমে এই নাটকের সমস্ত কাহিনী সহজে উল্লেখ করা হয়েছে তাই যদি তুমি মনোযোগ দিয়ে করতে পারো তাহলে খুব সহজেই এই ঘটনার মাধ্যমে সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব বা সারমর্ম মনে রাখতে পারবে।
 
১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই এই সিরাজউদ্দৌলা নাটকটি তৈরি করা হয়েছে। এই নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী জুড়ে রয়েছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার জীবন বৃত্তান্ত। এই নাটকের কাহিনী শুরু হয় যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে। সেই সময় নবাব সিরাজউদ্দৌলা খুব চিন্তিত ছিল বাংলার সম্রাজ্য নিয়ে। কারণ সে সময় ইংরেজরা বাংলার সাম্রাজ্য শাসন ব্যবস্থাকে দখল করতে চেয়েছিল।
 
নবাব প্রায় সময় বাংলার মানুষদের এবং বাংলার সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করতো এবং তার লোকজনদের সাথে পরামর্শ করত। কিন্তু নবাব সিরাজউদ্দৌলা কখনো ভাবতে পারেনি তারা কাছের মানুষগুলো অর্থাৎ তার খালা, সেনাপতি, পালিত ভাই, মীরজাফর তার সাথে প্রতারণা করবে। মূলত এদের ষড়যন্ত্রের কারণেই বাংলার শেষ নবাবের পতন হয়।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব এর চিত্র-১
 
নবাব সিরাজউদ্দৌলা এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সবই জানতেন কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা নবাবের আত্মীয়-স্বজন হওয়ার কারণে তাদের কিছু বলতেন না। এক কথায় তিনি দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে গিয়েছিলেন। একদিকে ষড়যন্ত্রকারীদের কিছু বলতে পারতেছেন না আবার অন্যদিকে বাংলার সাম্রাজ্য হারানোর ভয়ে ছিলেন। এই বিষয়গুলোই সিকান্দার আবু জাফর সিরাজউদ্দৌলা নাটকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
 
নবাবের আত্মীয় স্বজনরা অর্থাৎ নবাবের কাছের লোকজনেরা ইংরেজ বাহিনীর সাথে ষড়যন্ত্র করে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটায় এবং পরবর্তীতে নবাবকে হত্যা করে। নবাবের স্বজনরা মনে করেছিল ক্ষমতা তাদের হাতে থাকবে কিন্তু ইংরেজদের ক্ষমতার উপর তাদের হাত ছিল না যার ফলে ক্ষমতা চলে যায় ইংরেজদের বা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে। এই ইংরেজদের শাসনামল ছিল প্রায় ২০০ বছর।
 
এই ২০০ বছর ধরে বাংলাকে শোষণ ও নির্যাতন করে ইংরেজরা। নবাব সিরাজউদ্দৌলা অনেক সাহসী দেশপ্রেমিক ছিলেন। যখন তিনি বুঝতে পারলেন তার পরাজয় নিশ্চিত তারপরও তিনি চিন্তা করেছেন তার রাজ্যের প্রজাদের সুখ শান্তি নিয়ে। তিনি আবার নতুন করে প্রস্তুতি গ্রহণ করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
 
পলাশীর যুদ্ধের পরাজয় বরণ করা এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যার পেছনে প্রধান ৩ জন মানুষের হাত রয়েছে। সেই ৩ জন মানুষ হচ্ছে রবার্ট ক্লাইভ, মীরজাফর এবং ঘসেটি বেগম। এই তিনজন মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, খলনায়ক এবং ষড়যন্ত্রের বিষয়গুলো গভীরভাবে সম্পর্কিত। তাই এই নামগুলো এবং নাটকে তাদের চরিত্রগুলো ভালোভাবে মনে রাখতে হবে।
 
অন্যদিকে বিশ্বাসীর তালিকায় ৩ জন রয়েছে যাদের নাম হলোঃ মীর মর্দান, রাইসুল জুলেখা এবং মোহনলাল। এরা ছিল অত্যন্ত সৎ, নীতিবান এবং ভরসার ব্যক্তি। তবে সিরাজউদ্দৌলা নাটকে সিকান্দার আবু জাফর লেখক হিসাবে নবাব সিরাজউদ্দৌলার দেশপ্রেম, সাহসিকতা এবং জাতীয় বীরের পরিচয় দিয়েছে। অর্থাৎ লেখক নবাবের চরিত্রের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেশ প্রেম রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছে।
 
এটাই ছিল সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব। তোমাদের যেকোনো পরীক্ষায় যদি সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব আসে তাহলে এই তথ্যগুলো অবশ্যই উল্লেখ করবে কারণ এখানে নাটকের কেন্দ্রীভূত সকল কাহিনী উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এই সম্পর্কে তো অনেক প্রশ্ন আসে, আশা করি এই তথ্যগুলো তোমাদের অনেক সাহায্য করবে।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের শেষ সংলাপ কার

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের শেষ সংলাপটি ছিলো মোহাম্মদি বেগ এর।

সিরাজউদ্দৌলা কোন ধরনের নাটক

সিরাজউদ্দৌলা নাটকটি ট্রাজেডি ধরনের নাটক।

কার নির্দেশে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়

মীরজাফরের পুত্র মীর মিরনের নির্দেশে সেরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়।

সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারী কে

সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারী হচ্ছে মোহাম্মদী বেগ।

ব্যক্তিগত মতামতঃ নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল ও সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব

এই আর্টিকেল জুড়ে সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিশেষ করে নবাব সিরাজউদ্দৌলার শ্বশুরের নাম কি, নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল, সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব, নবাব সিরাজউদ্দৌলা কোথায় বন্দি হন, কার নির্দেশে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয় এবং সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারী কে এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
 
আশা করি এই আর্টিকেল থেকে তুমি অবশ্যই উপকৃত হয়েছো। বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কিত এবং বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটকে ফলো করে পাশেই থাকো। কারণ এসব বিষয় সম্পর্কে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। আজকে এই পর্যন্তই, আবার দেখা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য। ততক্ষণ নিজের খেয়াল রাখবে, ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 3 =