প্রিয় বাংলালিংক সিম ব্যবহারকারী, আপনাদের মধ্যে অনেকেই প্রশ্ন করে বাংলালিংক নাম্বার চেক করার কোড কত এবং অনেকেই জানতে চাই ফ্রিতে টাকা রিচার্জ করার উপায় সম্পর্কে। তো যারা এই বিষয়গুলো জানার পাশাপাশি banglalink সিম সম্পর্কে অন্যান্য সকল তথ্য জানতে চান তাদের জন্য হতে পারে এটি একটি শ্রেষ্ঠ আর্টিকেল। বাংলালিংক নাম্বার চেক করার কোড ও বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে এসব সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
![]() |
বাংলালিংক নাম্বার চেক করার কোড |
আমার বুদ্ধিবাস থেকে দেখছি banglalink সিম কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ধরনের অভিনেতা অভিনেত্রীদের মাধ্যমে মার্কেটিং করছে। যার ফলে প্রথম থেকেই বাংলালিংক সিমের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই সিমের সকল সুযোগ-সুবিধা যদি আপনি পেতে চান তাহলে আগে এগুলো সম্পর্কে জানতে হবে তারপরে আপনি অফার গুলো নিতে পারবেন। তো যাই হোক, যেহেতু আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় বাংলালিংক নাম্বার চেক করার কোড কত এই সম্পর্কে তোর চলুন আগে সেটি জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকাঃ বাংলালিংক সিম সম্পর্কে খুঁটিনাটি
বাংলালিংক সিমের ইতিহাস বাংলাদেশের টেলিকম সেক্টরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলালিংকের যাত্রা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পরিবর্তন ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলালিংকের প্রথম যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে, তবে তখন এটি “Sheba Telecom” নামে পরিচিত ছিল। সেবার ছিল বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটরদের মধ্যে banglalink শীর্ষ অবস্থানে অবস্থান করছে।
২০০৪ সালে মিশরভিত্তিক টেলিকম কোম্পানি Orascom Telecom শেবা টেলিকম কিনে নেয় এবং ২০০৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নতুন ব্র্যান্ড নামে “বাংলালিংক” চালু করে। এরপর ২০১৩ সালে বাংলালিংক 3G সেবা চালু করে, যা দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারে বিপ্লব আনে। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা মোবাইল ফোনে উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে থাকে।
২০১৮ সালে বাংলালিংক 4G সেবা চালু করে এবং দেশব্যাপী দ্রুত নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করে। এর ফলে গ্রাহকরা আরও ভালো ইন্টারনেট স্পিড পায়। তবে যেহেতু ভবিষ্যতে বাংলাদেশ 5G ইন্টারনেট আসতে চলেছে তাই আশা করা যায় 5G ইন্টারনেটেরও ও ভালো একটি সার্ভিস পাওয়া যাবে বাংলালিংক টেলিকম থেকে।
বাংলালিংক নাম্বার চেক করার কোড। বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে
এই আর্টিকেলের নিচের অংশের মধ্যে বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ার নাম্বার দেওয়া হয়েছে যা অনেক সময় প্রয়োজন হয়, তাই আপনার প্রয়োজন হলে এই তথ্যটিও জেনে নেবেন। যাইহোক, গ্রামীণফোন সিম ব্যতীত যারা অন্যান্য কোম্পানির সিম ব্যবহার করেন এদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষদেরই মনে থাকে না কিভাবে নাম্বার দেখতে হয়।
বিশেষ করে যারা নতুন সিম রেজিস্ট্রেশন করে প্রথম অবস্থায় তাদের মোবাইল নাম্বার মনে থাকে না বা মুখস্ত হয় না। এরকম সমস্যায় আমিও বহুবার পড়েছি কারণ আমি যখন নতুন সিম রেজিস্ট্রেশন করতাম তখন অন্য নতুন নাম্বারটি মুখস্ত করলে কিছু সময় মনে থাকে তার পরে আবার ভুলে যাই। যার ফলে ডায়াল করে আবার নাম্বারটি দেখে নিতে হয়।
তবে নাম্বারটি আপনি যদি চেক করতে চান তাহলে আপনাকে জেনে রাখতে হবে বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে নাম্বার দেখতে হয়। আর আপনি যদি বাংলালিংক সিম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনাকে জেনে রাখতে হবে বাংলালিংক নাম্বার চেক করার কোড সম্পর্কে। তাই আপনারা যাতে এরকম পরিস্থিতিতে আপনাদের নিজেদের নাম্বার নিজেরাই বের করতে পারেন তার একটি কোডও রয়েছে।
প্রত্যেকটি সিম কোম্পানিরই নিজস্ব কিছু কোড রয়েছে যে কোড ডায়াল করলে আপনি আপনার সিমের নাম্বারটি দেখতে পারবেন। আপনার মোবাইলে যদি ইন্টারনেট সংযোগ থাকে আর যদি গুগল প্লে স্টোর কিংবা ক্রোম ব্রাউজার থেকে মাই বাংলালিংক অ্যাপ্লিকেশনটি ইন্সটল থাকে তাহলে ওই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনি আপনার বাংলালিংক নাম্বারটি দেখতে পারবেনন
আর যদি অ্যাপ্লিকেশনটি ইন্সটল করে সেটআপ দেওয়া না থাকে অর্থাৎ আপনি যদি বাটন মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন তাহলে ডায়াল প্যাডে নাম্বার ডিজিট করে জানতে পারবেন। এছাড়া বাংলালিংক নাম্বার চেক করার আরো বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার বাংলালিংক নাম্বার চেক করতে পারবেন।
আপনাদের সুবিধার্থে আমি পাঁচটি পদ্ধতির কথা উল্লেখ করব যে উপায়গুলো অবলম্বন করলে আপনি খুব সহজেই চেক করতে পারবেন কিংবা বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে তা জানতে পারবেন। আপনারা এগুলোকে বাংলালিংক নাম্বার দেখার উপায় হিসেবেও অবহিত করতে পারেন। যাই হোক, চলুন পর্যায়ক্রমে এগুলো জেনে নেওয়া যাক।
বাংলালিংক নাম্বার চেক করার সহজ ৫টি পদ্ধতিঃ
- USSD কোড ব্যবহার করে
- My Robi apps ব্যবহার করে
- বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে কল করে
- সিমের প্যাকেট চেক করে
- অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মাধ্যমে কিংবা মোবাইল দোকানদারদের মাধ্যমে
USSD কোড ব্যবহার করে
আপনি স্মার্টফোন কিংবা বাটন মোবাইল দিয়ে খুব সহজেই USSD কোড ব্যবহার করে আপনার বাংলালিংক নাম্বারটি জেনে নিতে পারবেন। এ কাজটি করার জন্য আপনি চলে যাবেন সর্বপ্রথম আপনার ডায়াল প্যাড স্ক্রিনে এর পরে *৫১১# ডায়াল করবেন। আপনি যদি এটি ডায়াল করতে পারেন তাহলে এক মুহূর্তের মধ্যেই পপ-আপ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আপনাকে আপনার নাম্বার জানিয়ে দেওয়া হবে।
তবে banglalink সিমের কর্তৃপক্ষ চাইলে যেকোনো সময় এই কোডটি পরিবর্তন করতে পারে। কোন কারণবশত বাংলালিংক সিমের কোম্পানি যদি নাম্বার দেখার কোডটি বদলায় তাহলে তৎক্ষণাৎ নতুন কোডটি আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে যাতে আপনারা ভোগান্তিতে না ভোগেন। তবে আমার মতে সকল সিম কোম্পানির উচিত একটি ইএসএসডি কোড ব্যবহার করা যাতে সকল সিমের গ্রাহকেরা শুধুমাত্র একটি কোডের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন সিমের নাম্বার গুলো চেক করতে পারে।
এর আগে রবি সিমের নাম্বার আলাদা ইউএসএসডি কোডের মাধ্যমে চেক করতে হতো কিন্তু সেটা বর্তমানে গ্রাহকদের সুবিধার্থে চেঞ্জ করে *২# এ রূপান্তর করা হয়েছে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন গ্রামীন সিম কোম্পানির সিমে নাম্বার চেক করতে হলে ঠিক এই কোডটি ব্যবহার করতে হয়। তাই যারা গ্রামীণফোন সিম এবং রবি সিম ব্যবহার করে তাদের জন্য অনেক সুবিধা।
তবে যদি আপনি এই কোড দ্বারা banglalink নাম্বার চেক করতে চান তাহলে unfinished লেখা দেখাবে অর্থাৎ বর্তমানে এই কোডটি কাজ করবে না। যাই হোক আপনি যদি কোডের মাধ্যমে বাংলালিংক সিমের নাম্বারে দেখতে চান তাহলে উপরে দেখানো *৫১১# কোডটি ব্যবহার করতে পারেন।
My Banglalink apps ব্যবহার করে
আপনি যদি একজন স্মার্টফোন ব্যবহারকারী হন অর্থাৎ আপনার যদি এন্ড্রয়েড কিংবা আইফোন থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি আপনার বাংলালিংক নাম্বার জানতে পারবেন। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুসারে বাংলালিংক নাম্বার চেক করার সবথেকে সহজ পদ্ধতি হলো মাই বাংলালিংক অ্যাপস এর মাধ্যমে দেখে নেওয়া। কারণ এটির মাধ্যমে নাম্বার দেখতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে এবং এতে কোন ধরনের কোড কিংবা মেসেজ পাঠানোর প্রয়োজন হয় না।
অনেক সময় অনেকের নাম্বার দেখার কোড কিংবা মেসেজ পাঠানোর নাম্বার মনে থাকে না হলে ফলে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতে হয়। তাই আপনি যদি এত ঝামেলা না চান এবং সহজ পদ্ধতিতে নাম্বার দেখতে চান সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি আপনার জন্য। তবে এই পদ্ধতিতে নাম্বার দেখতে হলে আপনাকে অবশ্যই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে হবে। বাটন মোবাইলের মাধ্যমে আপনি কখনোই এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে পারবেন না এবং এই অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নাম্বার জানতে পারবেন না।
তো যারা প্রশ্ন করেছিলেন বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে তাদের বলছি আপনারা এই অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। যেহেতু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষেরই স্মার্টফোন রয়েছে তাই আমি ধারণা করছি আপনারও ব্যক্তিগত স্মার্টফোন রয়েছে এবং সেটিতে বাংলালিংক সিম insert করা রয়েছে। তো যাই হোক আপনি সর্বপ্রথম চলে যাবেন google প্লে স্টোরে এবং সেখান থেকে ফ্রিতে My Banglalink অ্যাপ্লিকেশনটি ইন্সটল দিবেন।
ইন্সটল দিয়ে লগইন করতে গেলে প্রথমে আপনার বাংলালিংক নাম্বারটি চাইবে সেখানে আপনি আপনার নাম্বারটি প্রদান করবেন। ভেরিফিকেশনের জন্য তারা আপনাকে একটি ওটিপি কোড পাঠাবে, ঐ কোডটি আপনি মাই বাংলালিংক অ্যাপস এর মধ্যে বসিয়ে ভেরিফিকেশন কমপ্লিট করবেন। এটি কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনি যদি শুধুমাত্র আপনার মাই বাংলালিংক অ্যাপ্লিকেশনে প্রবেশ করেন তাহলে আপনি আপনার বাংলালিংক নাম্বার, ব্যালেন্স, এমবি, মিনিট এবং এগুলো মেয়াদ দেখতে পারবেন।
বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে কল করে
বাংলালিংক নাম্বার দেখার ইউএসএসডি কোড, এসএমএস পাঠানোর নাম্বার মনে না থাকে কিংবা মাই বাংলালিংক অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার জন্য স্মার্টফোনও না থাকে তাহলে আপনি আপনার বাংলালিংক নাম্বার চেক করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে অবশ্যই বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে কল দিতে হবে এবং তাদের সাথে কথা বলে আপনার নাম্বারটি জেনে নিতে হবে।
বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করার উপায় গুলো হচ্ছেঃ
- ১২১ নাম্বারে কল করে
- হেল্পলাইন ২১৫ নাম্বারে কল করে
- ০১৯১১৩০৪১২১ নাম্বারে কল করে
- *১২১*১০*৫# USSD CODE ডায়াল করে
- info@banglalinkgsm.com এই gmail address এ যোগাযোগ করে
সিমের প্যাকেট চেক করে
আপনি যদি উপরের ২টি উপায় সহ ৩ নাম্বার উপায় অর্থাৎ বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে কল করে বাংলালিংক নাম্বার চেক করার উপায়টি ও অবলম্বন করতে না পারেন কিংবা অবলম্বন করতে না চান সেক্ষেত্রে আরেকটি একটি পদ্ধতি রয়েছে যেটির মাধ্যমে আপনি কোন ইউএসএসডি কোড ডায়াল না করে, কারো সাথে যোগাযোগ না করে অর্থাৎ কোন ধরনের ইলেকট্রিক পণ্যের ব্যবহার না করেও জেনে নিতে পারবেন বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে।
banglalink sim সহ সকল সিম কেনার সময় সেটি একটি প্যাকেটে প্রদান করা হয়। আর ওই প্যাকেটের গায়ে স্টিকার দিয়ে নাম্বারটি লেখা থাকে। ওই নাম্বারটি হচ্ছে আপনার কাঙ্খিত বাংলালিংক সিমের নাম্বার। আপনি যদি আপনার বাংলালিংক সিমের প্যাকেট হারিয়ে ফেলেন কিংবা কোনো কারণে নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তাহলে NID কার্ড দিয়ে ওই সিমটি উত্তোলন করেছিলেন সেই এনআইডি কার্ডটি নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ারে নিয়ে যাবেন।
অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মাধ্যমে কিংবা মোবাইল দোকানদারদের মাধ্যমে
আপনি যদি উপরোক্ত উপায় গুলো অবলম্বন করতে অকৃতকার্য হন সেক্ষেত্রে অন্যদের সাহায্য গ্রহণ করতে পারেন। আপনি আপনার আশেপাশের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মাধ্যমে অর্থাৎ যারা মোবাইল সম্পর্কে ভালো জানে কিংবা আপনার বাজারের মোবাইলের দোকানদারদের কাছে আপনার মোবাইল সিমসহ নিয়ে গেলে তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনার বাংলালিংক নাম্বার চেক করে দেখিয়ে দিবে।
বাংলালিংক এমবি অফার
ইন্টারনেটের সাথে আমাদের জীবনের সম্পৃক্ত তার দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর ইন্টারনেট ব্যবহারের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে সিমের এমবি। তবে অনেকেই আবার ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। যাই হোক আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য রবি সিমে যেসব ইন্টারনেট অফার রয়েছে অন্যান্য কোন সিমের নাই।
আমি দীর্ঘ ৭ বছর যাবত বাংলালিংক সিম ব্যবহার করছি শুধুমাত্র ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য। কারণ বাংলালিংক সিমে এমন অনেক ইন্টারনেট অফার রয়েছে যা আমি অন্য কোন সিমে পাইনি। আবার অন্যদিকে এই সিমের ইন্টারনেট স্পিড অনেক ভালো। তবে সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চল গুলোতে বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক কম পায় অর্থাৎ গ্রামগঞ্জে banglalink সিমের ইন্টারনেট স্পিড কম। তবে আপনি যদি শহর অঞ্চলে বসবাস করেন তাহলে নির্দ্বিধায় banglalink সিমের ইন্টারনেট speed এর আসল মজা নিতে পারবেন।
আপনি যদি বাংলালিংক সিমের ইন্টারনেট অফার সবগুলো জেনে থাকেন তাহলে আপনি আপনার প্রয়োজন এবং পছন্দ মত অফারটি নিতে পারবেন। তাই আপনাদের সুবিধার্থে বাংলালিংক সিমের যতগুলো ইন্টারনেট অফার রয়েছে তার মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত অফার গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো।
১. স্বল্পমেয়াদী প্যাকেজ
- 100MB 1 দিন, মূল্য ১৭ টাকা
- 500MB 1 দিন, মূল্য ২৯ টাকা
২. মাঝারি মেয়াদী প্যাকেজ
- 1GB 7 দিন, মূল্য ৪৮ টাকা
- 2GB 7 দিন, মূল্য ৬৭ টাকা
৩. দীর্ঘমেয়াদী প্যাকেজ
- 3GB 30 দিন, মূল্য ৯৯ টাকা
- 15GB 30 দিন, মূল্য ২৯৯ টাকা
৪. সাপ্তাহিক আনলিমিটেড প্যাকেজ
- অনলিমিটেড ইন্টারনেট ৭ দিন, মূল্য ৩৫০ টাকা
৫. মাসিক আনলিমিটেড প্যাকেজ
- অনলিমিটেড ইন্টারনেট ৩০ দিন, মূল্য ১,২৯৯ টাকা
৬. দৈনিক ইন্টারনেট প্যাকেজ
- 250MB 1 দিন, মূল্য ২১ টাকা
- 1.5GB 1 দিন, মূল্য: ৪৮ টাকা
৭. সাপ্তাহিক ইন্টারনেট প্যাকেজ
- 4GB 7 দিন, মূল্য ৯৮ টাকা
- 7GB 7 দিন, মূল্য ১৪৮ টাকা
৮. পনেরো দিনের প্যাকেজ
- 6GB 15 দিন, মূল্য ১২৮ টাকা
৯. মাসিক ইন্টারনেট প্যাকেজ
- 8GB 30 দিন, মূল্য ১৯৮ টাকা
- 20GB 30 দিন, মূল্য ৪৯৯ টাকা
১০. ইন্টারনেট অ্যাড-অন প্যাকেজ
500MB (অ্যাড-অন) 30 দিন, মূল্য ২৪ টাকা
1GB (অ্যাড-অন) 30 দিন, মূল্য ৫৮ টাকা
১১. নাইট প্যাকেজ
- 1GB (রাত ১২টা থেকে ৮টা পর্যন্ত) ১ দিন, মূল্য ১৪ টাকা
- 5GB (রাত ১২টা থেকে ৮টা পর্যন্ত) ৭ দিন, মূল্য ৬৭ টাকা
১২. সোশ্যাল প্যাকেজ
- 1GB (ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ) ৩০ দিন, মূল্য ৩৮ টাকা
উল্লেখিত অফার গুলো বাদেও এমন আরো অনেক আকর্ষণীয় অফার রয়েছে। আপনি যদি অন্যান্য অফারগুলো সম্পর্কে জানতে চান তাহলে *৮৮৮# ডায়াল করে দেখে নিতে পারেন অথবা মাই বাংলালিংক অ্যাপসটি ডাউনলোড করে ইন্টারনেট অফার অপশন থেকে সকল ধরনের অফার গুলো দেখে নিতে পারবেন। এছাড়া বাংলালিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করেও আপনি বাংলালিংক এমবি অফার গুলো দেখতে পারবেন।
বাংলালিংক এমবি চেক
আর্টিকেলের উপরের অংশের দিকে বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে এ সম্পর্কে যেহেতু বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে তাই আশা করছি এ বিষয়ে আপনাদের কোন সন্দেহ নেই। তো যাই হোক, আপনি যদি আপনার বাংলালিংক সিমে টাকা এমবি খুব সহজে চেক করতে চান তাহলে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন। বাংলালিংক সিমে এমবি চেক করার সব থেকে জনপ্রিয় দুটি মাধ্যম হচ্ছে ইউএসএসডি কোড ব্যবহার করে এবং গুগল প্লে স্টোর থেকে বাংলালিংক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি ইন্সটল করে।
আপনি যদি ইউএসএসডি কোডের মাধ্যমে এমবি চেক করতে চান তাহলে *৫০০০*৫০০# ডায়াল করবেন। আর আপনি যদি অ্যাপ্লিকেশন এর মাধ্যমে চেক করতে চান তাহলে সর্বপ্রথম গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করে আপনার নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই করে নিবেন। এর পরে অ্যাপ্লিকেশনটিতে প্রবেশ করলেই আপনার বাংলালিংক সিমে থাকা টাকা, এমবি, মিনিট এবং এগুলোর মেয়াদ জানতে পারবেন।
বাংলালিংক মিনিট অফার
প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের মানুষদের সাথে কথা বলতে হয়। আর যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ফোন একটি যুগান্তর পরিবর্তন এনে দিয়েছে। আপনিও যদি মোবাইল ফোনে সিম ব্যবহার করে এটিকে যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ওই সিমের মিনিট অফার গুলো জানতে হবে।
যেহেতু আপনি এই আর্টিকেলে প্রবেশ করেছেন তাহলে আপনি অবশ্যই বাংলালিংক সিম ব্যবহার করেন, তাই আপনাদের সুবিধার্থে আর্টিকেলের এই অংশে বাংলালিংক সিমের সকল ধরনের মিনিট অফার গুলো নিজে উল্লেখ করা হচ্ছে যাতে আপনারা এই অফার গুলো সম্পর্কে সহজে জানতে পারেন এবং আপনাদের প্রয়োজন এবং পছন্দ অনুসারে অফার গুলো ক্রয় করতে পারেন।
১. স্বল্পমেয়াদী মিনিট প্যাকেজ
- 15 মিনিট 1 দিন, মূল্য ৯ টাকা
- 30 মিনিট 1 দিন মূল্য ১৪ টাকা
২. সাপ্তাহিক মিনিট প্যাকেজ
- 60 মিনিট, ৩ দিন, মূল্য ২৩ টাকা
- 120 মিনিট ৭ দিন, মূল্য ৪৮ টাকা
৩. মাসিক মিনিট প্যাকেজ
- 300 মিনিট ৩০ দিন, মূল্য ১২৮ টাকা
- 500 মিনিট ৩০ দিন, মূল্য ১৯৮ টাকা
৪. আনলিমিটেড মিনিট প্যাকেজ
- অনলিমিটেড মিনিট ৩০ দিন, মূল্য ৮৯৯ টাকা
৫. দীর্ঘমেয়াদী মিনিট প্যাকেজ
- 1000 মিনিট ৯০ দিন, মূল্য ৫৯৯ টাকা
- 1500 মিনিট ১২০ দিন, মূল্য ৮৯৯ টাকা
৬. মিনিট + ইন্টারনেট কম্বো প্যাকেজ
- 50 মিনিট + 500MB ইন্টারনেট ৩ দিন, মূল্য ৪৮ টাকা
- 100 মিনিট + 1GB ইন্টারনেট ৭ দিন, মূল্য ৯৮ টাকা
৭. ফ্যামিলি মিনিট প্যাকেজ
- ১০০০ মিনিট ৩০ দিন (শেয়ারেবল), মূল্য: ৪৫০ টাকা
এছাড়া বাংলালিংক মিনিট অফার আরো রয়েছে। বাংলালিংক সিমের মিনিট অফার গুলোর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত অফার গুলো উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি যদি সকল ধরনের মিনিট অফার গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে ডায়াল করুন *১১০০# কিংবা আমায় banglalink এর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন। এছাড়া আপনি চাইলে banglalink এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও বাংলালিংক মিনিট অফার গুলো দেখে নিতে পারবেন।
বাংলালিংক মিনিট চেক
বাংলালিংক মিনিট চেক করতে ডায়াল প্যাড থেকে *১২১*১# ডায়াল করুন অথবা মাই banglalink সফটওয়্যার এর মাধ্যমেও আপনি আপনার বাংলালিংক সিমে থাকার মিনিট খুব সহজে চেক করতে পারবেন। তবে সফটওয়্যার এর মাধ্যমে চেক করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ডাটা কানেকশন অন করতে হবে এবং নেট স্পিড ভালো থাকতে হবে।
বাংলালিংক ব্যালেন্স চেক
আপনার বাংলালিংক সিমের ব্যালেন্স চেক করতে *১২৪# ডায়াল করুন। আর আপনারা যারা ফ্রিতে টাকা রিচার্জ করার কথা ভাবছিলেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন কারণ এমন কোন সিম কোম্পানি নেই যারা আপনাকে বিনামূল্যে কিংবা ফ্রিতে টাকা রিচার্জ করে দেবে। তবে বর্তমানে এ ধরনের অনেক প্রতারণা চলছে এজন্য আপনারা এ ধরনের প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকবেন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করবেন।
বাংলালিংক ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নেওয়ার উপায়
ইমারজেন্সি ব্যালেন্স অনেক সময় অনেক প্রয়োজন হয়। অনেক সময় এরকম হয় ক্যাশ টাকা থাকে কিন্তু রিচার্জ করার মত জায়গা থাকে না। আবার অনেক সময় এরকম হয় যে রিচার্জ করার মত অনেক জায়গা আছে কিন্তু কাছে টাকা নেই। এরকম পরিস্থিতিতে আপনারা চাইলে ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স গ্রহণ করতে পারেন।
তবে ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নিতে হলে আপনাকে কোড ডায়াল করতে হবে অথবা অ্যাপস এর মাধ্যমে নিতে হবে। আপনি যদি কোডের মাধ্যমে বাংলালিংক সিমে ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নিতে চান তাহলে *৮৭৪# ডায়াল করুন। আর এপস এর মাধ্যমে ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নিতে হলে শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স অপশনের উপর ট্যাপ করতে হবে।
তবে এজন্য আবার কিছু শর্ত প্রযোজ্য রয়েছে। আপনি যদি সিমে নিয়মিত রিচার্জ করেন এবং লেনদেন করেন তাহলে আপনাকে সহজেই তারা ইমারজেন্সি ব্যালেন্স দিয়ে দিবে। কিন্তু আপনি যদি বাংলালিংক সিমের রিচার্জ কম করেন তাহলে আপনাকে ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স দিতে পারে বা নাও দিতে পারে।
আপনার এ রিচার্জ এর পরিমাণ বা অ্যামাউন্ট যদি বেশি হয় তাহলে আপনাকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স দিবে। আর আপনার রিচার্জের পরিমাণ যদি কম হয় তাহলে কম অ্যামাউন্টের ইমারজেন্সি ব্যালেন্স হিসেবে ব্যবহার করার জন্য দিবে। তবে এই ব্যালেন্স তৎক্ষণাৎ কেটে নিবে যখন আপনি পরবর্তীতে রিচার্জ করবেন তখন।
FAQ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব
বাংলালিংক সিমের মালিক কে?
VEON LTD হচ্ছে বাংলালিংক সিমের মালিক। VEON একটি আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন এবং ডিজিটাল পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানি, যার সদর দপ্তর নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত। VEON বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ডিজিটাল পরিষেবা প্রদান করে থাকে।
বাংলালিংক এর বয়স কত?
বাংলালিংক এর বয়স ১৯ বছর কারণ এটি ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল।
বাংলালিংক এর টাওয়ার কয়টি?
২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলালিংকের প্রায় ১৩,৫০০+ মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার রয়েছে।
ব্যক্তিগত মতামতঃ বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে বাংলালিংক সিম সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে বাংলালিংক নাম্বার চেক করার কোড, বাংলালিংক সিমের নাম্বার কিভাবে দেখে এসব জানার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পেরেছেন বলে আমি মনে করছি। এই আর্টিকেল থেকে আপনি যদি সামান্যতম উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
এছাড়া banglalink সহ অন্যান্য যেকোন সিম সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। কমেন্ট বক্সগুলো নজরদারি করার জন্য আমাদের পার্মানেন্ট কিছু মেন্টর রয়েছে যারা সবসময় আপনাদের কমেন্টগুলোর উত্তর দিয়ে থাকে। তো আজকে এই পর্যন্তই, আবার দেখা হবে। আর আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিত্যনতুন আর্টিকেলগুলো সবার আগে পেতে ওয়েবসাইটকে ফলো করে পাশেই থাকুন।