দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি ও, দোয়া কুনুত এর বিকল্প। তিনটি দোয়া কুনুত, দোয়া কুনুত বাংলা ছবি

প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা, আসসালামুয়ালাইকুম। আল্লাহর অশেষ রহমতে আশা করছি আপনারা
সবাই ভাল আছেন এবং আমিও ভাল আছি। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে দোয়া দোয়া কুনুত
সম্পর্কে বিশেষ করে কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি এবং দোয়া কুনুত এর বিকল্প কি
সেই সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক
দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত।
দোয়া-কুনুত-মুখস্ত-করার-সহজ-পদ্ধতি-দোয়া-কুনুত-এর-বিকল্প-দোয়া-কুনুত-বাংলা-ছবি-দোয়া-কুনুত-আহলে-হাদিস-দোয়া-কুনুত-বাংলা-উচ্চারণ-সহ-অর্থ-দোয়া-কুনুত-কোন-সূরার-অংশ
যেহেতু এটি একটি ইসলামিক পোস্ট তাই আপনারা কখনোই তাড়াহুড়া করে পড়বেন না। এমন
অনেকে রয়েছে যারা কোরআন শরীফ পড়তে পারেনা তাদের জন্য দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ
সহ অর্থ দেওয়া হয়েছে, তাই আপনি আরবি না জানলেও এটি মুখস্ত করতে পারবেন। এছাড়া
যারা দোয়া পারেন না তাদের জন্য দোয়া কুনুত এর বিকল্প দোয়াও রয়েছে। চলুন আপনাদের
মূল্যবান সময় নষ্ট না করে দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত
হওয়া যাক।

দোয়া কুনুত কোন সূরার অংশ

কোরআন মাজিদে ১১৪ টি সূরা রয়েছে যেগুলো ৬৬৬৬ আয়াতে বিভক্ত রয়েছে। তো এই ১১৪ টি
সূরার মধ্যে কুনুত নামের কোন সূরা নেই। আর কুনুত এর আগে “দোয়া” লেখা আছে যেটা
দেখে বোঝায় যাচ্ছে এটি একটি দোয়া। সূরা হলে তো সূরা লেখায় থাকতো। তাই
এক কথায় বলতে গেলে দোয়া কুনুত কোন সূরার অংশ নয় বরং এটি একটি দোয়া। আর
বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়তে হবে এটা বিভিন্ন সহিহ হাদিস থেকে দলিল পাওয়া
গিয়েছে।

দোয়া কুনুত কখন পড়তে হয়

দোয়া কুনুত কখন পড়তে হয় সেই সম্পর্কে কয়েকটি সহি হাদিস রয়েছে। সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত) এর পরিচ্ছেদ ১০ এর মধ্যে উল্লেখ রয়েছে এশার বিতর নামাজে
দোয়া কুনুত পাঠ করতে হবে। এছাড়া আবুল হাওরা (রহঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলিয়াছেন
“হাসান ইবনু ’আলী (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
আমাকে কয়েকটি বাক্য শিখিয়ে দিয়েছেন যেগুলো আমি বিতর নামাজে পাঠ করি। যার মধ্যে
দোয়া কুনুতও রয়েছে।
দোয়া কোন সম্পর্কে আলী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত রয়েছে। হজরত আলী (রাঃ) থেকে
বর্ণিত রয়েছে যে, বিশ্ব নবী শুধুমাত্র রমজান মাসে রুকুর পরে কুনুত পাঠ করতেন। আর
অন্য সময় পাঠ করতেন না। এই হাদিসের সাথে আলেম-ওলামাদেরও অনেক মতের সমর্থন
রয়েছে। আবার অন্যদিকে ইমাম শাফিঈ এবং ইমাম আহমাদের মতও হুবহু একই।
 
যেহেতু অনেক হাদিস নিয়ে আলেম-ওলামাদের মতপার্থক্য রয়েছে ঠিক একইভাবে বিতরের
নামাজের দোয়া কুনুত পাঠের বিষয়েও মতপার্থক্য রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ
(রাঃ) বলেছেন, সারা বছর অর্থাৎ প্রত্যেক বিতরের নামাজে কুনুত পাঠ করা উচিত। তিনি
রুকুর আগে এই দোয়াটি পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন যেভাবে আমরা সাধারণত করে থাকি। আর
এই মতের সাথে ইসহাক, কুফা, ইবনুল মুবারাক এবং সুফিয়ান সাওরীর অধিবাসীরা সম্মত
হয়েছেন।
 
যেহেতু দলিল অনুসারে সমস্ত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তাই আশা করি বুঝতে পেরেছেন
দোয়া কুনুত কখন পড়তে হয় এবং কিভাবে পড়তে হয় সেই সম্পর্কে। আপনার যদি দোয়া
কুনুত মুখস্ত না থাকে সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত অংশ থেকে দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ
পদ্ধতি অবশ্যই জেনে নেবেন তাহলে মুখস্ত করা আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে
যাবে। এছাড়া অনেকেই জানতে চাই তিনটি দোয়া কুনুত সম্পর্কে তাই নিজের
অংশে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এজন্য আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ
দিয়ে পড়তে থাকুন

দোয়া কুনুত আরবি

যারা কোরআন শরীফ পারেন কিন্তু দোয়া কুনুত মুখস্ত নেই তারা চাইলে এই অংশ থেকে
দোয়া কুনুত আরবি লেখা পড়ে খুব সহজে মুখস্ত করে ফেলতে পারবেন। আর যারা আরবি
পারেন না তাদের জন্য নিম্নের অংশে দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ দেওয়া
হয়েছে।
 

“اَللَّهُمَّ اهْدِنِيْ فِيْمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنِيْ فِيْمَنْ عَافَيْتَ،
وَتَوَلَّنِيْ فِيْمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لِيْ فِيْمَا أَعْطَيْتَ،
وَقِنِيْ شَرَّمَا قْضَيْتَ؛ إِنَّكَ تَقْضِىْ وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ،
وَإنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَّالَيْتَ، وَلاَ يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ،
تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ”.
 
আপনি যদি সহি-শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতে না পারেন তাহলে কখনোই আরবি লেখা
গুলো পড়ার চেষ্টা করবেন না। কারণ আরবিতে এমন অনেক গ্রামার রয়েছে যেগুলো না
মেনে আরবি পড়লে তা কখনোই শুদ্ধ হয় না। তাই আপনি যদি মোটামুটি লেভেলের আরবি
পড়তে পারেন তাহলে এটি পড়ার পরে অবশ্যই এর বাংলা উচ্চারণ দেখে নেবেন।

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ

যেহেতু আমাদের দেশর মাতৃভূমি বাংলা তাই অধিকাংশ লোকই বাংলা ছাড়া অন্যান্য
ভাষায় খুবই কম পারদর্শী। যারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে তারা ব্যতীত কোরআন শরীফ
শুদ্ধভাবে পড়তে পারে এরকম মানুষের সংখ্যা খুবই কম। যদিও একজন মুসলমান হিসেবে
কোরআন শরীফ পড়তে পারা আমাদের জন্য অতীব ও জরুরী।
 
তারপরেও অনেকে অলসতা করে আরবি পড়া শিখে না কিংবা শিখতে চাই না। তবে এমন অনেক
কোর্স কিংবা বই রয়েছে যেগুলো পড়ে আপনি এক মাসের মধ্যে কোরআন শরীফ পড়তে
পারবেন শুদ্ধভাবে। আরও যতদিন শুদ্ধভাবে পড়া না শিখছেন ততদিন দোয়া কুনুত বাংলা
উচ্চারণ সহ অর্থ দেখে দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে মুখস্ত
করতে পারেন।
 

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ
: (“আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা
ওয়া নুমিনুবিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর। ওয়া
নাশকুরুকা ওয়া লা নাকফুরুকা ওয়া নাখলাঊ ওয়া নাতরুকু মাইঁইয়াফঝুরুকা।
আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকা নুসাল্লি ওয়া নাসঝুদু ওয়া ইলাইকা নাসআ;
ওয়া নাহফিদু নারঝু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আজাবাকা; ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি
মুলহিক্ব।”)
দোয়া কুনুতের বাংলা অনুবাদ: হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা
করি, তোমার কাছেই ক্ষমা চাই, তোমার প্রতি ঈমান রাখি এবং তোমার ওপরই ভরসা করি।
সকল মঙ্গল তোমার দিকেই ন্যস্ত করি। আমরা তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ, অকৃতজ্ঞ হই না। হে
আল্লাহ! আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করি, তোমারই জন্য নামাজ আদায় করি এবং তোমাকেই
সিজদা করি। আমরা তোমার দিকে দ্রুত ছুটে আসি এবং এগিয়ে চলি। আমরা তোমার রহমতের
প্রত্যাশা করি এবং তোমার আযাব থেকে ভীত হই, কেননা তোমার আযাব তো কাফেরদের জন্যই
নির্ধারিত।
 
আরবির যত ভালই অনুবাদ করা হোক না কেন তা পরিপূর্ণভাবে সরাসরি পরিশুদ্ধভাবে আরবি
উচ্চারণের মত হবে না। তাই আপনাদের উচিত যত দ্রুত সম্ভব আরবি ব্যাকরণ অনুসারে
কোরআন তেলাওয়াত শেখা। আর যতদিন শিখতে না পারছেন ততদিন বাংলা উচ্চারণ দেখে
মুখস্ত করে রাখতে পারেন পরবর্তী সময়ে তা অবশ্যই পরিশুদ্ধ করে নিবেন। আর
যারা এটি মুখস্থ করতে পারবেন না কিংবা যাদের মুখস্থ হচ্ছে না তারা
চাইলে দোয়া কুনুত এর বিকল্প দোয়াটি মুখস্ত করে নিতে পারেন, যা
আর্টিকেলের নিচের অংশে দেওয়া রয়েছে।

দোয়া কুনুত বাংলা ছবি

অনেকেই মোবাইলে ডাউনলোড করে রাখার জন্য কিংবা অন্যান্য উদ্দেশ্যে দোয়া কুনুত
বাংলা ছবি লিখে গুগলে সার্চ করে থাকে। অনেক সময় অনেকেই কাঙ্খিত ছবিগুলো একসাথে
পাই না যার ফলে তাদের বিভ্রান্তিতে ভুগতে হয়। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আমাদের
আর্টিকেলের এই অংশে তিনটি ছবি আপলোড দেওয়া হয়েছে। প্রথমে দোয়া কুনুত আরবিতে,
এরপরে আর বাংলা উচ্চারণ এবং শেষে দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থের ছবি দেওয়া
হয়েছে।
দোয়া কুনুত বাংলা ছবি, দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি
 
দোয়া কুনুত বাংলা ছবি, দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি
 
দোয়া কুনুত বাংলা ছবি, দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি
আপনি বিভিন্ন পদ্ধতিতে ছবি গুলো ডাউনলোড করতে পারবেন। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে এই
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করেন তাহলে প্রথমে আপনি যে ছবিটি ডাউনলোড করতে চাচ্ছেন সেই
ছবির উপরে চাপ দিয়ে ধরে রাখবেন। তাহলে আপনার সামনে download image নামে একটি
অপশন আসবে, ওই অপশনের উপরে টাচ করলে ছবি ডাউনলোড হয়ে যাবে।
 
আর আপনি যদি কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ থেকে ওয়েবসাইট ভিজিট করে থাকেন তাহলে যে
ছবিটি ডাউনলোড করতে চাচ্ছেন ওই ছবির উপরে মাউস পয়েন্টার নিয়ে right click
করবেন। তাহলে আপনার সামনে ঠিক ওই মোবাইলের অপশন এর মত download image লেখা
আসবে, তখন আপনি খুব সহজেই দোয়া কুনুত বাংলা ছবি ডাউনলোড করতে পারবেন।

দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি

একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত কোরআন মাজীদ সহিহ শুদ্ধভাবে
তেলাওয়াত শেখা। ছোটবেলায় যারা এটি শিখতে পারেননি বড় হয়ে হয়তো বিভিন্ন
কাজের ব্যস্ততার কারণে কিংবা লজ্জার কারণে শিখতে পারেন না। এজন্য সব থেকে ভালো
হয় শৈশব বয়সেই মসজিদের মক্তবে গিয়ে ইমাম সাহেবের থেকে শিখে নেন।
 
যারা ছোটবেলায় শিখতে পারেননি তাদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে আর কখনোই শিখতে পারে
না। তবে মানুষ চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে তাই আপনি যদি ছোটবেলায় কোন কারণবশত
কোরআন শরীফ পড়া শিখতে না পেরে থাকেন তাহলে আল্লাহর ওয়াস্তে এটি পড়া শিখে
নিবেন। ইসলাম ধর্ম অনুসারে যত কাজ রয়েছে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আরবির ব্যবহার
অপরিসীম।
 
অন্তত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য হলেও আমাদের কোরআন তেলাওয়াত শিখতে হবে।
তো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে এশার নামাজের ওয়াজিব নামাজ হচ্ছে বিতর। আর বিতর
নামাজে দোয়া কুনুত পড়তে হয়। যারা কুরআন পড়তে পারেন তারা আরবি দেখে দেখে
মুখস্ত করতে পারবেন। আপনি যেভাবে অন্যান্য সূরাগুলো মুখস্ত করেছেন সেই একই
পদ্ধতি অবলম্বন করে খুব সহজেই দোয়া কুনুত মুখস্ত করে নিতে পারবেন।
 
আর যারা দুর্ভাগ্যবশত কোরআন মাজীদ করতে পারেন না তারা অবশ্যই বাংলা উচ্চারণ
দেখে মুখস্ত করার চেষ্টা করবেন। তবে আপনাদের এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে,
দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি কি? আপনাদের সুবিধার্থে আমরা বেশ কয়েকটি
পদ্ধতি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব যেগুলো অবলম্বনের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই এই
দোয়াটি মুখস্ত করতে পারবেন।
 

দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি গুলো নিম্নরূপঃ
  • সঠিক উচ্চারণ শিখে
  • অডিও বা ভিডিও শুনে
  • অন্যদের পড়া শুনে
  • নিজে ধীরে ধীরে মুখস্ত করা শুরু করুন
  • পড়ার সময় ও স্থান নির্ধারন করা
  • ভেঙ্গে ভেঙ্গে মুখস্ত করুন
  • বারবার পড়ুন
  • নিজে হাতে বারবার লেখা
  • দোয়া কুনুত বাংলা ছবি ঘরের দেয়ালে টাঙিয়ে রেখে
  • কয়েকজন একসাথে মুখস্ত করুন
  • ধৈর্য ধরুন
অডিও বা ভিডিওর মাধ্যমে
 
আমি এমন অনেক ব্যক্তিকে চিনি যারা পড়তেও পারে না এবং লিখতে পারে না। তারা যখন
সময় পাই তখন তাদের মোবাইলে ডাউনলোড করা দোয়া কুনুতের অডিও শুনে। অনেকে আছে
তাদের ফ্রি সময় বিভিন্ন গান বাজনা শুনে অপচয় করে। কিন্তু আপনি চাইলে সময়টুকু
কাজে লাগানোর মাধ্যমে মুখস্ত করতে পারবেন।
 
আপনি যখন রাতে ঘুমাতে যান কিংবা ঘুম থেকে ওঠেন তখন চাইলে এগুলো শুনতে পারেন।
আবার আপনি যে সময়টুকু আড্ডা দেন কিংবা শুয়ে বসে কাটিয়ে দেন সেই সময়টুকুতে
আপনি যদি দোয়া কুনুতের অডিও ক্লিপ কিংবা বিভিন্ন হুজুরের তেলাওয়াতকৃত ভিডিও
দেখেন তাহলে আস্তে আস্তে এটি আপনার আয়ত্তে চলে আসবে। আর যখন আয়ত্তে চলে আসবে
তখন আপনার জন্য এটি মুখস্থ করা অনেক সোজা এবং সহজ হয়ে যাবে।
 
সঠিক উচ্চারণ শিখে
 
সঠিক উচ্চারণ থেকে আপনি কিন্তু খুব সহজেই দোয়া কুনুত মুখস্ত করে ফেলতে পারবেন।
সঠিক উচ্চারণ শিখতে হলে আপনাকে অবশ্যই বারবার করতে হবে আর বারবার পড়ার কারণে
আপনার প্রায় মুখস্থ হওয়ার মত অবস্থা হয়ে যাবে। আর যখন অর্ধেক অর্ধেক মুখস্ত
হওয়ার মত ভাব হবে তখন কয়েকদিন মনোযোগ দিয়ে করলেই পুরো দোয়াটি আপনার মুখস্ত
হয়ে যাবে।
 
সঠিক উচ্চারণ শেখার জন্য আপনি এই আর্টিকেলের দেওয়া উচ্চারণ এর স্থানটুকু
স্ক্রিনশট নিয়ে রাখতে পারেন যাতে পরবর্তী সময় সেগুলো দেখে পড়তে পারেন। কিংবা
উচ্চারণ গুলো বারবার দেখে এবং মনে রাখার মাধ্যমে আপনি শিখতে পারেন। দোয়া কুনুত
মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
 
অন্যদের পড়া শুনে
 
আপনাদের পরিচিত কিংবা আপনি যাদের সাথে প্রতিনিয়ত চলাফেরা করেন তাদের মধ্যে
যারা দোয়া কুনুত পড়তে পারে অর্থাৎ যাদের মুখস্থ রয়েছে তাদের বলবেন আপনার
সামনে বারবার এটি তেলাওয়াত করতে। বারবার তেলাওয়াত করার কারণে আপনি ধীরে ধীরে
এটি মনে গেঁথে নিতে পারবেন যার ফলে মুখস্ত করা আপনার জন্য অনেক সোজা হয়ে যাবে।
দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি
মানুষ যা শুনে এবং যা দেখে অবসর সময় কিংবা ঘুমের মধ্যে মানুষ ওই বিষয়টি
নিয়েই ভাবতে থাকে। তাই আপনার সামনে প্রতিদিন যদি এই দোয়াটি তেলাওয়াত করা হয়
তাহলে আপনার মনের মধ্যেও এটি বারবার প্রতিধ্বনিত হতে থাকবে। আর আপনি এমন
মানুষদের সাথে চলাফেরা করবেন যাদের দোয়া কুনুত মুখস্ত রয়েছে এবং যারা সহিহ
শুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারে। তবে আপনার কাছে দোয়া কুনুত যদি
খুবই কঠিন মনে হয় তাহলে বিতর নামাজে দোয়া না পড়ে দোয়া কুনুত এর বিকল্প
দোয়াও পড়তে পারবেন।
 
পড়ার সময় ও স্থান নির্ধারন করা
 
যারা ছাত্র জীবন অতিবাহিত করছেন কিংবা যারা ছাত্র জীবনের সময়গুলো অতিবাহিত
করেছেন তারা অবশ্যই হয়তো জানেন পড়া মুখস্ত করার জন্য এবং দীর্ঘদিন যাবত মনে
রাখার জন্য পড়ার সময় এবং স্থান নির্ধারণ করা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি
যদি ডিসিপ্লিন অনুসরণ না করে কাজ করেন তাহলে সেটা থেকে কখনোই ভালো ফলাফল পাবেন
না।
 
সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি ভোরে ফজরের নামাজের পরে পড়তে পারেন। কারণ ওই সময়
মস্তিষ্ক ফ্রেশ থাকে এবং পড়ার একটি পরিবেশ তৈরি হয়। আর প্রতিদিন একই সময়
পড়ার চেষ্টা করবেন। যদি আপনি সকালে পড়তে না পারেন সেক্ষেত্রে মাগরিবের
নামাজের পর থেকে এশার আজান পর্যন্ত করবেন। আর আপনি এমন জায়গায় পড়ার স্থান
নির্বাচন করবেন যেখানে প্রাকৃতিক আবহাওয়া বাতাস আসা-যাওয়া করে এবং জায়গাটি
যাতে খোলামেলা হয়। খোলা আকাশের নিচে পড়তে পারলে আরো ভালো।
 
প্রত্যেকটি সফল কাজের পেছনে রয়েছে পরিশ্রম এবং ধৈর্য। আর আপনি যদি দোয়া কুনুত
মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি গুলো পুঙ্খানুপু রূপে অনুসরণ করতে চান তাহলে এটাকেউ
আপনার কাজ হিসেবে নিতে হবে। আপনি অন্যান্য কাজ করার সময় যেরকম গুরুত্ব দেন এই
দোয়াটি মুখস্ত করার সময়ও আপনাকে একই পরিমাণ গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে আপনি
অল্প সময়ের মধ্যে মুখস্ত করতে সক্ষম হবেন বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
 
নিজে ধীরে ধীরে মুখস্ত করা শুরু করুন
 
আপনি যদি আরবি পড়া পারেন সেক্ষেত্রে আরবি দেখে দেখে মুখস্ত করবেন। এক্ষেত্রে
আপনি ইউটিউবের সাহায্য নিতে পারেন। আবার বর্তমানে এমন অনেক অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে
যেগুলোর মাধ্যমে আপনি প্রতিটি লাইন বাই লাইন অনুসারে মুখস্ত করতে পারবেন। তাই
আস্তে আস্তে নিজের মুখস্ত করা শুরু করুন।
 
ভেঙ্গে ভেঙ্গে মুখস্ত করুন
 
আপনি যদি একবারে দোয়া কুনুত মুখস্ত করতে না পারেন সেক্ষেত্রে ভেঙে ভেঙে পড়তে
পারেন। দোয়া কুনুত এর যতগুলো লাইন রয়েছে আপনি প্রত্যেকটি লাইনের নির্দিষ্ট
গ্যাপ অনুসারে ভাগ করে নেবেন। এমন ভাবে ভাগ করবেন যাতে আপনি একবারে একভাগ
মুখস্ত করে মনে রাখতে পারেন। একভাগ মুখস্ত হলে আপনি পরবর্তী ভাগগুলো
পর্যায়ক্রমে মুখস্ত করবেন।
 

ভেঙে ভেঙে দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি
  • ১ম ভাগ – আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা
  • ২য় ভাগ – ওয়া নুমিনুবিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা
  • ৩য় ভাগ – ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর।
  • ৪র্থ ভাগ – ওয়া নাশকুরুকা ওয়া লা নাকফুরুকা ওয়া নাখলাঊ
  • ৫ম ভাগ – ওয়া নাতরুকু মাইঁইয়াফঝুরুকা।
  • ৬ষ্ট ভাগ – আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকা নুসাল্লি
  • ৭ম ভাগ – ওয়া নাসঝুদু ওয়া ইলাইকা নাসআ;
  • ৮ম ভাগ – ওয়া নাহফিদু নারঝু রাহমাতাকা
  • ৯ম ভাগ – ওয়া নাখশা আজাবাকা;
  • ১০ম ভাগ – ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক্ব
আপনি যদি প্রতিদিন এক ভাগ করেও মুখস্ত করতে পারেন তাহলে মাত্র ১০ দিনেই দোয়া
কুনুত সম্পূর্ণ মুখস্থ করতে পারবেন। তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিন কমপক্ষে এক ভাগ
হলেও মুখস্ত করার। আল্লাহ আপনাদের এটি মুখস্থ করার এবং সহীহ শুদ্ধভাবে কোরআন
তেলাওয়াত করার তৌফিক দান করুক, আমিন।
এভাবেও যদি আপনি মুখস্ত করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আরেকটি উপায় রয়েছে। যেহেতু
প্রতিদিন বিতর নামাজে এটি পড়া আবশ্যক নয় তাই বয়সের কারণে কিংবা অন্য কারণে যদি
স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি দোয়া কুনুত এর বিকল্প দোয়াও
পড়তে পারবেন কোন সমস্যা নেই।
বারবার পড়ুন
 
মানুষের মস্তিষ্ক কিন্তু এরকম নয় যে আপনি একবার পড়বেন এবং সারা জীবন সেটি
আপনার মনে থাকবে। আল্লাহ মানুষকে খুব দুর্বলভাবে সৃষ্টি করেছেন তাই আপনাকে এই
বাস্তবতা অবশ্যই মেনে নিতে হবে। আপনি যদি কোন জিনিস প্রথমবারের জন্য মুখস্ত
করতে চান তাহলে আপনি অবশ্যই সেটি বারবার তেলাওয়াত করতে হবে।
 
আর একবার মুখস্ত হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে আপনি যদি ভুলেও যান সেসময় শুধুমাত্র
কয়েকবার পড়লে আপনার আবার মুখস্ত হয়ে যাবে। তাই আপনি যদি দোয়া কুনুত মুখস্ত
করতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিদিন বারবার করতে হবে। আর যেহেতু এটি প্রতি এশার
বিতরের নামাজে পড়তে হয় এজন্য একবার মুখস্থ হয়ে গেলে আর ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা
নেই, যদি আপনি পথ নিয়মিত নামাজ আদায় করে থাকেন।
 
নিজে হাতে বারবার লেখা
 
প্রতিদিন দোয়াটি তেলাওয়াত করার পাশাপাশি আপনাকে বারবার লিখতে হবে। কারণ আমার
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অনুসারে যে কোন জিনিস পড়ার পরেই লিখলে সেটি মনে গেঁথে যায়,
যার ফলে তাড়াতাড়ি মুখস্ত হয়। তাই আপনি যদি লিখতে পারেন তাহলে অবশ্যই শোনা
এবং পড়ার পাশাপাশি লিখতেও হবে।
 

দোয়া কুনুত বাংলা ছবি ঘরের দেয়ালে টাঙয়ে রেখে
 
আমাদের আর্টিকেলের উপরের অংশে কিন্তু এর ছবি দেওয়া হয়েছে। আপনি চাইলে এই
ছবিগুলো প্রিন্ট করে এনে আপনি যেখানে ঘুমান কিংবা দিনের অধিকাংশ সময় যে
জায়গায় কাটান সেখানে আঠা দিয়ে আটকিয়ে রাখতে পারেন। যার ফলে আপনি যখনই ওই
ছবির দিকে তাকাবেন তখনই একবার করে করা হয়ে যাবে।
 
কয়েকজন একসাথে মুখস্ত করুন
 
দিনের অধিকাংশ সময় আপনি যাদের সাথে কাটান তাদেরকে নিয়ে একসাথে দোয়া কুনুত
মুখস্ত করার চেষ্টা করুন। কারণ সাইকোলজি অনুসারে মানুষ যে ধরনের মানুষদের সাথে
দিনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করে ওই মানুষটিও ধীরে ধীরে তাদের মত হয়ে যায়।
তাই আপনি চাইলে আপনার বন্ধু কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের গ্রুপ বানিয়ে
একসাথে মুখস্ত করতে পারেন।
 
ধৈর্য ধরুন
 
যেকোনো কাজে সফল হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে ধৈর্যধারণ। এই বিষয়ে আল্লাহ বলেন,
নিশ্চয়ই আমি ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছি“। যেখানে আল্লাহ স্বয়ং ধৈর্য ধারণের
কথা বলেছেন তাই অবশ্যই এর মধ্যে ফজিলত রয়েছে। উপরে দেওয়া দোয়া কুনুত মুখস্ত
করার সহজ পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করার পরেও আপনি যদি মুখস্ত করতে না পারেন তাহলে
আপনাকে বারবার চেষ্টা করতে হবে এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
 

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়তে ভুলে গেলে
 
অনেক সময় বিতরের নামাজ পড়ার সময় ভুলে দোয়া কুনুত পড়তে মনে থাকে না। এজন্য
অনেকের মনে প্রশ্ন হয়ে থাকে বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়তে ভুলে গেলে করণীয়
কি? তো যারা এই বিষয়টি জানতে চাচ্ছেন তাদের সুবিধার্থে এই প্রশ্নের উত্তরটি
আমি তিনটি অংশে বিভক্ত করেছি। তো চলুন বাড়তি সময় নষ্ট না করে জেনে নেওয়া যাক।
  • ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মাজহাব অনুযায়ী বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া
    ওয়াজিব এবং এটি প্রতিদিন পড়তে হবে। তার মতামত অনুসারে যদি কেউ বিতরের
    নামাজে দোয়া কুনুত না পড়ে তাহলে সাহু সিজদার মাধ্যমে নামাজকে পরিপূর্ণ করতে
    হবে। আর যদি কেউ সাহস সিজদা না দেয় তাহলে নামাজ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না।
  • আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকি ৩৯৮৩ নাম্বার হাদিসে পাওয়া যায়, হাসান (রহ) থেকে
    বর্ণিত তিনি বলেছেন যে, “ذَا نَسِيَ الْقُنُوتَ فِي الْوِتْرِ سَجَدَ
    سَجْدَتَيِ السَّهْوِ
    ” অর্থাৎ (বিতরের নামাজে যে ব্যক্তি দোয়া কুনুত পড়তে
    ভুলে যায় সে যেন সাহু সিজদাহ দেয়)।
  • অন্যদিকে বিভিন্ন আলেমদের মতামত হচ্ছে, বিতরের নামাজ হচ্ছে ওয়াজিব কিন্তু
    বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব নয়। এটি যেহেতু সুন্নতের
    অন্তর্ভুক্ত তাই বিতরের নামাজে যদি কোন ব্যক্তি ভুলে দোয়া কুনুত না পড়ে
    তাহলে সাহু সেজদা দেওয়া লাগবে না। বিজোড় সালাতকে বিতর বলা হয়, এশার বিতরের
    নামাজ ৩ রাকাত পড়লেই হবে।

দোয়া কুনুত এর বিকল্প। তিনটি দোয়া কুনুত

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা দোয়া কুনুত তো দূরে থাক আরবি হরফগুলোই চিনে না।
তো যারা এরকম পরিস্থিতিতে রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলবো আপনারা অতি দ্রুত কোরআন
মাজীদ শুদ্ধভাবে পড়া শিখেন। যেহেতু বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া অনেকে
বলেছে সুন্নত অনেকে বলেছে ওয়াজিব, যাইহোক আপনার যদি দোয়া কুনুত মুখস্থ না থাকে
তাহলে উপরের অংশে আলোচিত দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করে দ্রুত
মুখস্ত করে নেবেন।
 
যারা দোয়া কুনুত পড়তে পারেন না তাদের জন্য দোয়া কুনুত এর বিকল্প দেয়া হয়েছে।
আপনি এই তিনটি দোয়া কুনুত এর বদলে পড়তে পারবেন। মূলত কুনুতের একাধিক দোয়া
রয়েছে, তাই আপনি আপনার সুবিধামতো মুখস্ত করে বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে পাঠ
করবেন।

  • “রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাছানাতাওঁ ওয়াকিনা
    আজাবান্নার”

  • “আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনান্নার”

  • “সুবহানাল্লাহ”, “আলহামদুলিল্লাহ”, “আল্লাহু আকবর”
আপনি এগুলো ভালোভাবে মুখস্ত করে নেবেন কারণ এগুলো দোয়া কুনুত এর বিকল্প দোয়া
হিসাবে বা এই তিনটি দোয়া কুনুত এর বদলেও পড়া যাবে। আপনারা এভাবে আপাতত নামাজ
পড়তে থাকবেন এবং পাশাপাশি দোয়া কুনুত মুখস্ত করে নেবেন। কারণ বিতরের নামাজে
দোয়া কুনুত পড়ার অনেক ফজিলত আছে যা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।

দোয়া কুনুত আহলে হাদিস

বাংলাদেশের আহলে হাদিসের একজন স্বনামধন্য ওস্তাদ “আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ” এক
বক্তৃতায় বলেছেন; শরীয়ত অনুসারে, বিতর নামাজ পড়লেই যে দোয়া পড়তে হবে এর
কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে যদি কোন ব্যক্তি নামাজের মধ্যে দোয়া কুনুত পড়তে চায়
তাহলে সে যেন বিতরের নামাজে পড়ে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) রমজান মাস ব্যতীত অন্য
সময় বিতরের নামাজে কখনোই দোয়া কুনুত পড়েনি তবে সাহাবীরা পড়েছেন।
 
তিনি আরো বলেছেন, বুখারী মুসলিম হাদিসে রয়েছে, “দোয়া কুনুত বিতর নামাজের
তৃতীয় রাকাতে হাত বাধা অবস্থাতেই পড়তে হবে”। দোয়া পড়া হয়ে গেলে সরাসরি
রুকু দিতে হবে। আর আবু দাউদ, নাসাঈ ও তিরমিজিতে রয়েছে, সাহাবীগণ রুকু থেকে
উঠেও পড়তেন। তবে রুকু থেকে উঠে পড়লে দোয়ার মতো হাত তুলে কুনুত পাঠ করতে হবে।

ব্যক্তিগত অভিমত

আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনি পরিপূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে দোয়া
কুনুত বাংলা ছবি, দোয়া কুনুত মুখস্ত করার সহজ পদ্ধতি, দোয়া কুনুত এর বিকল্প
এবং তিনটি দোয়া কুনুত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একজন দ্বীনি মুসলিম ভাই হিসাবে
এই আর্টিকেলটি আপনার অন্যান্য পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করবেন। যাতে তারাও আপনার
মত এই সম্পর্কে জানতে পারে এবং শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করতে পারে।
 
তো আজকে এই পর্যন্তই, আল্লাহর যদি হায়াত দারাজ করে তাহলে ইনশাআল্লাহ আবারও
দেখা হবে অন্য কোন আর্টিকেলে ইসলামিক কোন তথ্য নিয়ে। ইসলামিক বিভিন্ন বিষয়
সম্পর্কে আমাদের ওয়েবসাইটে নতুন নতুন আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। তাই আমাদের
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিত্য নতুন আর্টিকেলগুলো সবার আগে পেতে ফলো করে পাশেই
থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − fifteen =